শান্তিনিকেতন : প্রতি বছরের মত এবারও ভোর ৫ টায় গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিকের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জন্ম জয়ন্তীর অনুষ্ঠান। সাড়ে ৫ টায় উত্তরায়ণে শুরু হয় কবিকণ্ঠ। পরে প্রথা অনুযায়ী সকাল ৭ টায় উপাসনা গৃহে শুরু হয় কবি কন্ঠ। এখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য , বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, আশ্রমিকরা। বৈদিক মন্ত্রপাঠ, ব্রহ্ম উপাসনা, রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রবীন্দ্রভবনে কবিকণ্ঠের অনুষ্ঠান। কবির জন্ম দিনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে দক্ষিণায়নের মাধবীবিতানে। সাঁওতালি ও মারাঠী ভাষায় গুরুদেবের লেখা অংশ থেকে পাঠ হয়। এরপর রবীন্দ্রভবনে কবির ব্যবহৃত চেয়ারে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন উপাচার্য। বিশ্বভারতীর অন্যান্য ভবনের ছাত্রছাত্রীরা এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। সন্ধ্যা সাতটায় গৌরপ্রাঙ্গনে বসে নৃত্যনাট্যের আসর।
রবীন্দ্র ভবনের উত্তরায়ণ, উদীচি, কোনার্ক ও শ্যামলীতে গুরুদেব বিভিন্ন সময়ে থেকেছেন। সেগুলিও সাজানো হয় যথাযতভাবে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি হয় চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে। অনেকটা গঙ্গাজলে গঙ্গা পুজোর মতই সকাল থেকে চলে বৈদিক মন্ত্রপাঠ, ব্রহ্ম উপাসনা, রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং নৃত্যানুষ্ঠান। পরে রবীন্দ্রভবনে কবির ব্যবহৃত চেয়ারে মাল্যদান করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিক।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন হয় ১৯৩৬ সালে। আগে বর্ষবরণ ও গুরুদেবের জন্ম দিন এক সঙ্গে পালিত হত। কারণ প্রচণ্ড দাব দাহ ও জল কষ্টের জন্য বিশ্বভারতীতে ছুটি পড়ে যেত। অর্থাৎ ২৫ বৈশাখ ছুটি থাকত। এখন সেই পরিস্থিতি নেই। তাই ২৫ শে বৈশাখে আলাদাভাবে গুরুদেবের জন্ম দিন পালিত হয়। বিশ্বভারতীতে প্রথম নববর্ষ পালিত হয় ১৯৩৬ সালের ১৫ এপ্রিল। বাংলা ১৩৪৩ সালে। ১৯৪১ সালের ১৪ এপ্রিল তথা বাংলা ১৩৪৮ সালের ১লা বৈশাখ বর্ষ বরণের দিন কবির জীবদ্দশায় শেষ জন্ম দিন পালন হয়। এদিন রামপুরহাটে তথ্য সংস্কৃতি দফতরে একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে “পড়ুন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর” বক্তব্যের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি, বোলপুরের পৌরভবনে রবীন্দ্র জয়ন্তীর আয়োজন করেন পৌরপ্রধান পর্ণা ঘোষ।